ENG | BEN

এ বিষয়ে সামাজিক অঙ্গনে পথ চলা শুরুর সময় আমরা চাই যত বেশী সম্ভব সংবেদনশীল মানুষের ভাবনার আলোয় পথের দিশা ঠিক করতে ৷

কেন “দ্যুলোক পাড়ি”

প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে ঝড়ের গতিতে ৷ বাড়ছে মানুষের গড় আয়ু ৷ কিন্তু সেই আলোর নিচে চাপা পড়ে থাকছে অন্য এক অন্ধকারের গল্প । সচরাচর সামনে আসে না। বরং তাকে এড়িয়ে যাওয়াটাই যেন দস্তর। জীবনের উপাসন্তে পৌঁছে শারীরিক ও সামাজিকভাবে দীর্ণ হন যে মানুষটি কিংবা বছরের পর বছর ফলহীন চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে করতে ক্লান্ত, কোণঠাসা হয়ে পায়ের তলার জমিটুকুও হারিয়ে ফেলে যে পরিবার, তাঁদের হাত ধরবার জন্যই “দ্যুলোক পাড়ি'-র ভাবনার উন্মেষ ৷

আমরা অনেকেই দেখেছি, হাসপাতাল বা বাড়িতে যন্ত্রবিদ্ধ, ওষুধনির্ভর অবস্থায় এমন বহু মানুষের জীবন কাটে, যাঁদের সামনে কোথাও এত টুকুও আলো নেই, সুস্থতার ন্যূনতম আশ্বাসটুকুও নেই । চিকিৎসা বিজ্ঞান জানে, তাঁরা কোনও দিনই সুস্থ হবেন না। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতি কাগজে-কলমে তাঁদের বাঁচিয়ে রাখে । ফল হবে না জেনেও যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি, জটিল অস্ত্রোপচার বা যন্ত্রনির্ভর জীবন মেনে নিতে হয় তাঁদের । আসলে তাঁরা যত না বাঁচেন, তার চেয়ে অনেক বেশি অনাগত অপেক্ষা করেন। অথচ এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এ দেশে নির্দিষ্ট বিধিবদ্ধ আইনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই আইনের কথা জানেন ক'জন? কতটুকু চর্চা হয় সেই আইনের প্রয়োগ নিয়ে? অন্তিম পর্যায়ে নিজের জীবনের পরিণতি কোন পথে চালিত হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি অধিকার যে তাঁদের আছে, তা জনতাকে জানানোর দায়িত্ব কে নেবে? “দ্যুলোকপাড়ি' স্বেচ্ছায় সেই সামাজিক গুরুদায়িত্ব নিতে চায়।


“দ্যুলোকপাড়ি”-র লক্ষ্য

প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে জন্মের পথটা নির্বির্ন করা যেমন জরুরি, সুস্থ-স্বাতীবিক জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীর চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকাটা যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি চলে যাওয়ার পথটিকেও সুগম করার ব্যবস্থা রাখা। বিজ্ঞানের বিরোধিতা করে নয়, বরং বিজ্ঞানের উপরে ভরসা রেখে ৷ যন্ত্রের ভরসায় জড় পদার্থের মতো শুধু টিকে থাকার অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার এই লক্ষ্যে মানুষের পাশে থাকতে চায় “দ্যুলোকপাড়ি' বিজ্ঞানের হাত ধরেই রুখতে চায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের এমন 'অপব্যবহার'। এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা, আরও বেশি সংবেদনশীল করার দায়িত্ব নিতে চান 'পাড়ি'র সদস্যরা ।

নিজের চলে যাওয়ার পথকে অকারণ যন্ত্র-কাঁটায় বিধে প্রলম্বিত করবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একজন ব্যক্তির রয়েছে। পৃথিবীর একাধিক দেশে এই অধিকারের প্রয়োগ করছেন তাঁরা। এ দেশেও চলে যাওয়ার অগ্রিম ইচ্ছাপত্র তৈরির অধিকার ২০১৮ সাল থেকেই রয়েছে। যদিও তা জানেন খুব কম সংখ্যক মানুষই । দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই অনুমোদনকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাই আমরা ৷ যদি কেউ নিজের যে কোনও বয়সে, যে কোনও পরিস্থিতিতে এমন ইচ্ছাপত্র তৈরি করতে চান, তা হলে “দ্যুলোক পাড়ি' তা নিজের হেফাজতে রাখতে প্রস্তুত। তেমন কোনও পরিস্থিতি কারও জীবনে তৈরি হলে, সেই সাক্ষরকারী ব্যক্তি বা তাঁর পরিবার যদি 'দ্যুলোকপাড়ি'-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তা হলে সেই ইচ্ছাপত্রের ভিত্তিতে কী ভাবে তাঁরা এগোবেন, সেই বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার থাকছে 'দ্যুলোক পাড়ি'-র তরফে ৷


রূপায়ণে

  • দেবশংকর হালদার
  • কল্লোল বসু
  • অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
  • চিন্ময় গুহ
  • সোমা মুখোপাধ্যায়
  • পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়
  • শমীক সরকার
  • লোপামুদ্রা মিত্র
  • জয় সরকার
  • অরিজিৎ সামস্ত
  • নির্মল সাহা
  • সৌরভ মাঝি
  • পরিমল ভট্টাচার্য
  • অশোকানন্দ কোনার
  • অভিজিৎ চৌধুরী
  • উদয় চৌধুরী
  • বিষান বসু
  • সৌমিত্র মিত্র
  • সৌভিক দুবে

আপনার মন্তব্য

যোগাযোগ

দ্যুলোক পাড়ি
চ্যাটার্জী ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার,
৩৩-এ জওহরলাল নেহেরু রোড,
১৬ তলা, রূম নম্বর ১২
কলকাতা – ৭০০০৭১

দূরভাষ: ০৩৩ - ২২৮৮ ০০১২

ইমেইল: dyulokpari@gmail.com